জুবায়েদ হোসেন
কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও সম্পাদনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মাওলা প্রিন্স তাঁর সাহিত্যপ্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে “আবার বছর কুড়ি পর” (২০২০) কাব্যগ্রন্থটি বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। কারণ, এই কাব্যের কবিতাগুলোতে জীবনানন্দ দাশের প্রভাব যেমন নিহিত, তেমনি জীবনানন্দের প্রভাব অতিক্রম করে কবির একান্ত ব্যক্তিগত কথা, ভাবনা ও স্বাধীন সত্তার প্রকাশও উজ্জ্বল। এতে কবির সচেতন আধিপত্যের সন্ধান মেলে; যা তাঁর স্বীয় প্রতিভার ফসল। “আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যে জীবনানন্দের প্রভাব ও কবি মাওলা প্রিন্সের স্বাতন্ত্র্য তুলে ধরার প্রয়াস নিয়ে বর্তমান আলোচনা।
“আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যে কবি মাওলা প্রিন্স জীবনের বিগত কুড়ি বছরের স্মৃতির প্রকাশ করেছেন। যেখানে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত নর-নারী, প্রেম-পরিণয় ও প্রকৃতির কথা ভেসে এসেছে। উৎসর্গপত্রে কবি নিজের পরম আরাধ্য মানসীকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন :
সুষমি
যে চোখে দেখেছি জীবনের গাঢ় রঙ।
সময়কে সাহিত্যের খাতায় তুলে ধরতে উন্মুখ কবি নিপুণভাবে রাঙিয়েছেন তাঁর কবিতার ফর্মকে। জীবনানন্দের ছায়ায় বসে একান্তভাবে নিজের আবেগ-অনুভূতি নিংড়ে দিয়েছেন এই কাব্যে। ‘কুড়ি বছর পরে’ কবিতায় জীবনানন্দ লিখেছিলেন, ‘আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি!’ আর, কবি মাওলা প্রিন্স বর্তমানে বসে লিখেছেন অতীত হওয়া বিশ বছরের নানান সুখ-দুঃখের স্মৃতির কথা। জীবনানন্দ দাশ যেখানে ইতিহাস ও কল্পনাকে আশ্রয় করে চরিত্র নির্মাণ করেছেন, সেখানে কবি মাওলা প্রিন্স পুরাণে পরিণত করেছেন বাংলা সাহিত্যের গল্প-উপন্যাসের নায়ক-নায়িকাদের। কবি জীবনানন্দের কবিতায় দূরতম দ্বীপের ভেতরে দীপ জ্বলেছে; আর, কবি মাওলা প্রিন্স তাঁর কবিতায় প্রেয়সীর চোখের ভেতরেই রঙের খেলার প্রতিফলন কল্পনা করেছেন : ‘সাদাকালোয় চোখ তার ধরে রাখে রঙের ক্যানভাস।’ [অপেক্ষার আঁধার] ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কবিতায় কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।’ আর, এই কাব্যের কবি মাওলা প্রিন্স ‘সবুজ ঘাসের ওম’ কবিতায় যেন তাঁর পূর্বপুরুষের কথাও বলেছেন। কবির দাদুর ইচ্ছে ছিল নাতিকে ডাক্তার বানানোর। কিন্তু, তা না হলেও বিশ বছর পর কবি ও কবিপত্নীর পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে দাদুকে দেওয়া কবির কথা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। কবির ভাষায় :
দাদু বললেন, বংশে একটা ডাক্তার হলো না!
আমি বললাম, দুঃখ করো না—
এক ডাক্তার হতে পারি নি জোড়া ডক্টর হয়ে ফিরবো;
“আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যের প্রথম কবিতাতেই কবি মাওলা প্রিন্স রবীন্দ্রনাথের ‘হৈমন্তী’ গল্পের হৈমন্তীর অপরূপ সৌন্দর্য প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁর প্রেমিকার মাঝে। হৈমন্তী ছাড়াও রবীন্দ্রনাথের সুভাষিণী, নজরুলের শিউলিমালা, বুদ্ধদেব বসুর কঙ্কাবতী, রশীদ করীমের তিশনা, শহীদুল জহিরের চন্দ্রভান, কিংবা বঙ্কিমচন্দ্রের শৈবলিনীও মিলেমিশে একাকার হয়েছে মাওলা প্রিন্সের প্রেমিকার চারিত্র্যগুণ ও রূপসৌন্দর্যে। শরৎসাহিত্যের প্রতি গভীর টান থেকেই কবির বিভিন্ন কবিতার সৌন্দর্য-চরিত্রে পরিণত হয়েছে বিলাসী, মৃত্যুঞ্জয়, পার্বতী ও হেমাঙ্গিনীরা। জীবনানন্দ ‘বনলতা সেন’ কবিতায় যেখানে প্রেমিকার চোখকে ‘পাখির নীড়ের মতো’ কল্পনা করেছেন, সেখানে কবি মাওলা প্রিন্স প্রেমিকার চোখকে প্রকাশ করেছেন অসংখ্য বিচিত্র উপমায় :
ক. পাথরের মতো চোখ তার। [অপভ্রংশমালা]
খ. পার্বতীর মতো চোখ তার। [নক্ষত্রের মতো]
গ. চোখ তার বিভ্রান্ত মেঘের বাড়ি। [বিকেলের ঘুম]
ঘ. সাদাকালোয় চোখ তার ধরে রাখে রঙের ক্যানভাস। [অপেক্ষার আঁধার]
ঙ. নৌকোর মতো চোখ তোমার। [চেয়েছিলো ঈশ্বর]
চ. চোখ তার সাদা কুয়াশার বক। [মেদিনীর পথে]
ছ. চোখ তার বিষলক্ষের ছুরি। [অপরাজিতা]
জ. শ্রাবণের উষ্ণ বর্ষা ছিলো তার নির্লিপ্ত চোখে [অপেক্ষা ছিলো]
ঝ. অঘ্রাণের ভর দুপুরে সোনারাঙা চোখ নিয়ে/ চোখে তার বিকেলের ঝরা রোদ [নির্বাক সুভাষিণী]
ঞ. বিমুগ্ধ চোখ ছিলো/ হাজার রাতের স্বপ্ন জমানো; [শঙ্খবালিকা]
ট. বিমুগ্ধ চোখ তার সরিষা ক্ষেতের মতো [স্কেচ]
ঠ. বিস্ময় কিংবা বিষণ্ন চোখ তুলে তাকিয়েছিলো/ কী এক ঘোরের ভেতর; [ধ্রুবতারা]
ড. অনিমিখ চোখে তার/ নরম মোমের উষ্ণ তরলে রাঙা রোদের স্বাদ ছিলো [সমান্তরাল]
ঢ. দূরের আকাশের নক্ষত্রের মতো/ চোখ দুটো ছাড়া; [চোখ দুটো]
ণ. বিষণ্ন চোখে চেয়ো না/ হাসিমুখে বলো কথা; [যদি আবার]
জীবনানন্দ যেখানে বনলতার চোখে ‘শ্রাবস্তীর কারুকার্য’ দেখেছেন, সেখানে কবি মাওলা প্রিন্স বলেছেন :
বিমর্ষ চোখ তুলে
তুমি হেঁটে যাও শ্রাবস্তি; [ঘুমের ভেতর]
এই কাব্যে জীবনানন্দ দাশের ‘সুচেতনা’ কবিতার ‘দূরতম দ্বীপের’ প্রসঙ্গ এসেছে বারবার। কিন্তু, পরক্ষণেই কবি জীবনানন্দের প্রভাব এড়িয়ে নিজের চরিত্র চিত্রণে দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। এক্ষেত্রে “আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যের ‘সোনার মুদ্রা’ কবিতার উদাহরণ :
নাম তার দূরতম দ্বীপের মতন।
বিলাসীও হতে পারে
মৃত্যুঞ্জয়ের সোনার মুদ্রা [সোনার মুদ্রা]
কবির প্রত্যেকটি কবিতার শুরু উপমার ভঙ্গিতে। কবি প্রেমিকার মুখ, চোখ, চুল মুঠোপদ্মের মতো রূপে ‘সরস্বতীর আদল’ দেখেছেন। এই কাব্যের প্রতিটি কবিতার চিত্রকল্পগুলো যেমন কবির শৈল্পিক দক্ষতার প্রমাণ করে, তেমনি কবিতাকে করেছে আরও বেশি সমৃদ্ধ। উদাহরণ :
ক. সবুজ সরস্বতীর নৌকার ভেতর একদিন
বসেছিলাম
মুখোমুখি দুজন
দেখেছিলাম রূপ তার খুলে রাখা বস্ত্রের মতন; [সবুজ সরস্বতী]
খ. বিমুগ্ধ চোখ তার সরিষা ক্ষেতের মতো
সবুজ-হলুদ
হাসিমাখা হেমন্তে দেখা হয়েছিলো একবার
রামসাগর কিংবা সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপের ভেতর; [স্কেচ]
জীবনানন্দ দাশ হেমন্তের ‘নির্জন কবি’ হলে “আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যের মাওলা প্রিন্সকে বলা যায় শরৎ, হেমন্ত ও শীতের ‘নির্জর কবি’। তাঁর কবিতায় সেই রূপ ধরা দিয়েছে ঋতুবৈচিত্র্যে :
ক. আমি তার রূপ দেখেছিলাম একদিন
শরতের ঝরা মেঘের ওমে গোধূলি বেলায়; [অপভ্রংশমালা]
খ. কার্তিকের হিমে পৃথিবীর যতো
রাঙা রাজকন্যা
কুহকী তিলোত্তমা হয়ে ওঠে
ভিড় করে ঘুমের ভেতর; [ঘুমের ভেতর]
গ. পৌষের কোমল শীতে ফিরে আসে আবার;
হয়তো কুড়ি কুড়ি বছর পর
সেই চোখ সেই চুল আর
অপেক্ষার আঁধার; [অপেক্ষার আঁধার]
ঘ. পৌষের গাঢ় কুয়াশার ওমে প্রজাপতির মতো
চোখ নেড়ে বলেছিলো সে
এতো রাতে [ রেলিং]
ঙ. পৌষের ঝরা কুয়াশায় শাদা বরফের মতো দিনে
দেখেছিলাম একবার [অপরাজিতা]
চ. কার্তিকের হিমের মতো তিনি হীরেন্দ্রনাথ দত্ত। [হীরেন্দ্রনাথ দত্ত]
ছ. পৌষের পূর্ণিমায় মুখ তার ভাসে [সবুজ সরস্বতী]
বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্যের উজ্জ্বলতম চরিত্রগুলোকে কবিতায় স্থান দেওয়ার পাশাপাশি কবি তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত চরিত্রগুলোকে কবিতায় এনে অতীত জীবনের স্মৃতিচারণ করেছেন। যেমন : সুষমি, দাদু, রবিনবাবু, অনিমেষ বৈদ্য, রবীন্দ্রনাথ দাস, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মৃদুল আচার্য, মনোরঞ্জন রায়, সইদার রহমান, মৌলবি স্যার ও পূর্ণিমা দাস। চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয়ের স্মৃতিচারণে এসেছে বিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত সৌন্দর্য ও সেখানকার মনোরম পরিবেশে মানব মনে বিশ্বজয়ের স্বপ্নবুননের কথকতা। কুড়ি বছর পর চার্চ অব গডের সুগাঢ় ছায়ালোকে কবির প্রশ্নাতুর মনের সন্ধান মেলে এভাবে :
আবার বছর কুড়ি পর
সন্ধ্যায় চার্চের ফটকে কিসের প্রার্থনায় পুনরায়
নিকটে আছি আমি;
জলের ধারায় কি ভেঙে গেছি আজ আমি তুমি আতুমি— [স্বপ্নশালুকের ওম]
এই স্মৃতিচারণে এসেছে কবির শীতল হৃদয়ে স্বপ্নবুননের কারিগর অনিমেষ বৈদ্য, রবীন্দ্রনাথ দাস, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মৃদুল আচার্য, মনোরঞ্জন রায়, সইদার রহমান, মৌলবি স্যার ও পূর্ণিমা দাস প্রমুখের নাম। কবি লিখেছেন :
ক. উদ্ভিদের রঙ দেহে মাখার প্রাকটিক্যাল ক্লাস
নিতে নিতে
মনোরঞ্জনবাবু দিয়েছিলেন জীবনের বার্তা
একদিন বিকেলের নরম রোদে; [মনোরঞ্জন রায়]
খ. দুপুরের রোদের ঘ্রাণে ইলেক্টিভ ম্যাথে দিতেন ধার
ত্রিকোণমিতির প্রেমিক যুবক কামার;
সবুজ পাতার সমতল জমিনে লম্ব আঁকি কুড়ি বছর পর আবার— [সইদার রহমান]
গ. নরম রোদের গন্ধে ছিলো জীবনের যতো আয়োজন;
বছর কুড়ি পর আবার ফিরে আসেন রবিনবাবু জ্যোতিষ্মান যৌবন— [রবীন্দ্রনাথ দাস]
এই মহান মানুষদের বোনা স্বপ্নকে যেন একে একে জয় করে চলেছেন কবি মাওলা প্রিন্স। কবির মন ও মনন গড়তে এই প্রতিষ্ঠানটির অবদান কুড়ি বছর পরও কবি একাগ্রচিত্তে স্মরণ করেছেন কবিতার ভাষায় অনুক্ষণ।
“আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যগ্রন্থে কবির প্রেম ও প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার। কিশোর জীবনের প্রেম, যৌবনে প্যারিস রোডে হাঁটা, রামসাগর বা সেন্টমার্টিনে দেখা মেয়েটির মুখ, কিংবা ‘পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের উজ্জ্বল ইটের খোপে বসে আঁকা একটি ছবি’ এখনও কবির স্মৃতিতে অমলিন। যে ছিল একসময় ‘দূরতম দারুচিনি দ্বীপ’, তাকে বাস্তবজীবনে প্রাপ্তি পরম আনন্দের। কবি লিখেছেন :
ক. কুড়ি বছর পর আবার আমরা হাঁটি আমরা ভিজি
যে যার মতন;
আমাদের সন্তানেরা পরিশোধ করে প্রতিটি চুম্বন— [চুম্বন]
খ. আবার বছর কুড়ি পর আমরা দুজন;
সমান্তরাল ট্রেন লাইনের মতন এখন আমরা স্বজন— [সমান্তরাল]
কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি মুক্ত শব্দ কবিতা’ —এই কথাকে যেন কবি মাওলা প্রিন্স হৃদয়ে ধারণ করেছেন। আর তাইতো কী নিপুণভাবে প্রতিটি শব্দের গাঁথুনিতে মুক্ত করেছেন জীবনের অতিক্রান্ত কুড়ি বছরকে। কোনো অদৃশ্য আবরণ তৈরি না করে সহজ-সরল-স্বতঃস্ফূর্ত ভঙ্গিতে উচ্চারণ করেছেন পূর্বপুরুষের কথা, কবির স্বপ্নের কথা, ভালোবাসার কথা, কবিতার কথা। মনের গভীরে প্রোথিত স্বপ্নের সফলতায় কবি আনন্দিত হলেও ভুলে যান নি তাঁর সংগ্রামী অতীতকে। আজও স্মৃতিতে ধরে রেখেছেন প্রতিটি সুখ-দুঃখের প্রতিটি মুহূর্তের কথকতা। কবি আসলে কিছুই ভুলতে চান না; লিখতে চান আরও কিছু মধুর জীবনস্মৃতি। জীবন যেমন থেমে নেই, তেমনি কবির মতে আমি-তুমি বা আতুমির গল্পও শেষ হওয়ার নয়। কবিতার ভাষায় :
শেষ হবে না আতুমির গল্প।
কুড়ি কিংবা
কুড়ি কুড়ি বছর পর [যদি আবার]
এই আতুমির গল্প সদা প্রবহমান। তারপরও কুড়ি বছর পরেও ‘পড়ে থাকে শুধু কার যেন পায়ের ছাপ’। [পায়ের ছাপ] এই কুড়ি বছরকে একটা জীবন ধরে নেওয়া যায়। তাহলে আবার কুড়ি বছর পর জীবনের গল্প লিখতে গিয়ে কবি যেন জীবনের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধির কথা বলতে বা লিখেতে পারেন নেই প্রত্যাশা করেছেন।
এই কাব্যের নামকরণে কবি জীবনানন্দ দাশের ‘কুড়ি বছর পরে’ কবিতার প্রথম লাইনের প্রত্যক্ষ সাদৃশ্য বিদ্যমান। লাইনটি হচ্ছে, ‘আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি!’ কিন্তু, জীবনানন্দ যেখানে রোমান্টিক আতিশয্যে আক্ষেপ ও আশার কথা উচ্চারণ করেছেন, কবি মাওলা প্রিন্স সেখানে স্বতন্ত্রভাবে তাঁর অতীতকে তুলে এনেছেন। কবির পরিচিত একান্ত আত্মীয়, প্রেমিকা, শিক্ষাজীবন ও সাহিত্যজগতের চরিত্রগুলো যেন জীবনানন্দের আবরণ থেকে কবিকে বের করে এনেছে। জীবনানন্দ দাশের পাশাপাশি কবির ব্যক্তিসত্তার বুদ্ধিদীপ্ত নির্মাণে “আবার বছর কুড়ি পর” কাব্যটি হয়ে উঠেছে অনন্য শিল্পসম্পদ।
‘আমি অতীত এবং সমকালের কথা বলছি।’ —কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর মতো কবি মাওলা প্রিন্স এই কাব্যে তাঁর অতীত ও সমকালকে তুলে এনেছেন নিপুণ শিল্পনৈপুণ্যে। পরিশীলিত শব্দ, ভাষা, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, চিত্রকল্প নির্মাণে কবিতার শরীর হয়েছে সুগঠিত ও সুসংহত। কাব্য জুড়ে কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার অদৃশ্য আবরণ থাকলেও কবি মাওলা প্রিন্স নিজস্ব শব্দচয়ন, চরিত্রনির্মাণ, ব্যতিক্রম ভাবনা ও শৈল্পিক কারুকার্যে তাঁর স্বকীয়তা প্রতিষ্ঠা করেছেন। আকৃতিতে কবিতাগুলো ছোট হলেও বিষয় ও ভাবনায় তা কুড়ি বছরের জীবনের, স্বপ্নের, সাধনার ও বিজয়ের বিজয়ী প্রকাশ।
Discussion about this post